“পেটের দায়ে ঘর ছেড়ে দূরে কাজে গিয়েছিলাম। খুব ভাল রোজগার না হলেও খেয়ে পরে সংসারটা চলে যাচ্ছিল। ছেলেমেয়েকে স্কুলে পড়াচ্ছি। আমার রোজগারের টাকা বাড়িতে পাঠিয়ে দিতাম। ওদেরও চলে যাচ্ছিল। কিন্তু আচমকাই লকডাউন সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। এখন চাইলেও আর বাড়ি ফিরতে পারছি না। কতটা পথ পেরলে ঘরে ফেরা যাবে তাও বুঝতে পারছি না। টানা দুই দিন হেঁটেছি। খাবারটুকুও জোটেনি। কিন্তু হাঁটা থামেনি। পায়ে ফোস্কা পড়েছে। যন্ত্রণা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে কালনায় আটকে পড়েছি। কবে বাড়ি যেতে পারব, কীভাবেই বা যাব জানি না। মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানার রাজনগরে বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী ও এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তারাও খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছে আমাকে নিয়ে।” বলছিলেন সাবির উদ্দিন। আর পাঁচটা পরিযায়ী শ্রমিকের মতো লকডাউনে তিনিও দিশেহারা। করোনার থেকেও বাড়ি ফেরাটাই এখন তাঁর কাছে প্রধান চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রামে তেমন রোজগারের সুযোগ না থাকায় কখনও ভিনরাজ্যে, কখনও অন্য জেলায় গিয়ে গতর খাটিয়ে দুই-পয়সা রোজগার করতেন সাবির। করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ধীরে ধীরে সারা দেশকে গ্রাস করেছে। তার পর আচমকাই লকডাউন শুরু হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের মত সমস্যায় পড়ে যান সাবির, নাজিরুল, সাদ্দাম ও আসিকুল। লকডাউন ঘোষণার সময় হাওড়ার ভবানীপুর গ্রামে ছিলেন তাঁরা। কাজ বন্ধ। তাই রোজগার বন্ধ। কয়েকদিনের মত রসদ ছিল। তা নিয়েও কোনওক্রমে কয়েকদিন কেটে যায়। এর পর নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন সাবির ও তাঁর বন্ধুরা।
সাবির জানান, “গত শনিবার হাঁটা শুরু করি। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে হেঁটে হাইরোডে আসি। সেখানে একটা গাড়ি পেয়ে তাতে করে মাত্র ৩০ কিলোমিটার যেতেই পুলিশ আটকে দেয়। তার পর ফের শুরু হয় হাঁটা। চৈত্রের তীব্র রোদ, সঙ্গে পায়ের ফোস্কা গলে ঘামে ভিজে যন্ত্রণা হচ্ছে। খিদেয় পেটে ছুঁচো যেন ডন মারছে। কিন্তু খাবার উপায় নেই। রাস্তায় কোনও দোকান খোলা নেই যে খাবার কিনে খাব। কলকাতার কাছে এসে এক ফল বিক্রেতাকে দেখতে পাই। চারজনে কলা আর লেবু কিনে খেয়েছি। তাতে কি আর খিদে কমে? ভাত-রুটি না পেলে? ওই অবস্থাতেই হেঁটেছি।”
তবে এ যাত্রাও সহজ হয়নি। রাস্তায় আরও অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। কখনও পুলিশ, কখনও স্থানীয় বাসিন্দারা আটকেছেন। করোনা আতঙ্কে অনেকে খারাপ ব্যবহারও করেছেন। ওইভাবেই সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় পৌঁছন চার বন্ধু। পুলিশ সেখানেও তাঁদের আটকে দেয়। আপাতত কালনার আরএমসি মার্কেট কমপ্লেক্সে ঠাঁই হয়েছে তাঁদের। দুইদিন পর সোমবার রাতে ভাতের মুখ দর্শন হয়। এরপর কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে। করোনার সন্ধান দেহে মেলেনি। তবে কোয়ারিন্টাইনে ১৪ দিন থাকতে হবে কালনাতেই। আপাতত সেখানে খাওয়া থাকার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। এত কাঠখড় পুড়িয়েও শেষরক্ষা হল না। কথা বলতে বলতে চোখে জল এসে গিয়েছিল সাবিরের। কান্না ভেজা গলায় বললেন, “বাড়ির লোকজনের জন্য বেশি চিন্তা হচ্ছে। ওরা ফোন করে কান্নাকাটি করছে আমার জন্য। কোনও উপায় নেই। ১৪ দিন এখন এখানেই থাকতে হবে।”
গ্রামে তেমন রোজগারের সুযোগ না থাকায় কখনও ভিনরাজ্যে, কখনও অন্য জেলায় গিয়ে গতর খাটিয়ে দুই-পয়সা রোজগার করতেন সাবির। করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ধীরে ধীরে সারা দেশকে গ্রাস করেছে। তার পর আচমকাই লকডাউন শুরু হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের মত সমস্যায় পড়ে যান সাবির, নাজিরুল, সাদ্দাম ও আসিকুল। লকডাউন ঘোষণার সময় হাওড়ার ভবানীপুর গ্রামে ছিলেন তাঁরা। কাজ বন্ধ। তাই রোজগার বন্ধ। কয়েকদিনের মত রসদ ছিল। তা নিয়েও কোনওক্রমে কয়েকদিন কেটে যায়। এর পর নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন সাবির ও তাঁর বন্ধুরা।
সাবির জানান, “গত শনিবার হাঁটা শুরু করি। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে হেঁটে হাইরোডে আসি। সেখানে একটা গাড়ি পেয়ে তাতে করে মাত্র ৩০ কিলোমিটার যেতেই পুলিশ আটকে দেয়। তার পর ফের শুরু হয় হাঁটা। চৈত্রের তীব্র রোদ, সঙ্গে পায়ের ফোস্কা গলে ঘামে ভিজে যন্ত্রণা হচ্ছে। খিদেয় পেটে ছুঁচো যেন ডন মারছে। কিন্তু খাবার উপায় নেই। রাস্তায় কোনও দোকান খোলা নেই যে খাবার কিনে খাব। কলকাতার কাছে এসে এক ফল বিক্রেতাকে দেখতে পাই। চারজনে কলা আর লেবু কিনে খেয়েছি। তাতে কি আর খিদে কমে? ভাত-রুটি না পেলে? ওই অবস্থাতেই হেঁটেছি।”
তবে এ যাত্রাও সহজ হয়নি। রাস্তায় আরও অনেক বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। কখনও পুলিশ, কখনও স্থানীয় বাসিন্দারা আটকেছেন। করোনা আতঙ্কে অনেকে খারাপ ব্যবহারও করেছেন। ওইভাবেই সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় পৌঁছন চার বন্ধু। পুলিশ সেখানেও তাঁদের আটকে দেয়। আপাতত কালনার আরএমসি মার্কেট কমপ্লেক্সে ঠাঁই হয়েছে তাঁদের। দুইদিন পর সোমবার রাতে ভাতের মুখ দর্শন হয়। এরপর কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে। করোনার সন্ধান দেহে মেলেনি। তবে কোয়ারিন্টাইনে ১৪ দিন থাকতে হবে কালনাতেই। আপাতত সেখানে খাওয়া থাকার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। এত কাঠখড় পুড়িয়েও শেষরক্ষা হল না। কথা বলতে বলতে চোখে জল এসে গিয়েছিল সাবিরের। কান্না ভেজা গলায় বললেন, “বাড়ির লোকজনের জন্য বেশি চিন্তা হচ্ছে। ওরা ফোন করে কান্নাকাটি করছে আমার জন্য। কোনও উপায় নেই। ১৪ দিন এখন এখানেই থাকতে হবে।”