: বাঙালির শ্রেষ্ঠ পার্বণ দুর্গাপুজোর সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পৃক্ত হওয়ার ধারাবাহিকতা এবারও বজায় রইল। মহাপুজোর আনন্দকে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে রাজ্যের ৩৬ হাজার পুজো উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াল সরকার। এই তালিকায় রয়েছে মহিলা পরিচালিত ১ হাজার ৫০০ পুজোও। গতবারের মতো এবারও পুজো উদ্যোক্তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য করা হবে বলে মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সঙ্গে মিলবে বিদ্যুৎ বিলে ৫০ শতাংশ ছাড়। এমনকী দমকল, পুরসভা বা পঞ্চায়েত থেকে পুজোর অনুমতি নিতে আবশ্যিক যে ‘ফি’ ধার্য হয়, তা মকুব এবারও। সব মিলিয়ে গতবার কোভিড পর্বে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবকে গোটা দেশের সামনে তুলে ধরতে যে উদ্যোগ নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার, তা এবারও বহাল থাকল।
মুর্শিদাবাদের দুই আসনের সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে কমিশন। ভবানীপুরের প্রার্থী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। দিন ঘোষণার সঙ্গেই চালু হয়েছে নির্বাচনী বিধি। প্রতিশ্রুতি বিলিবণ্টন করার ক্ষেত্রে কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কমিশন। সেই নিষেধাজ্ঞা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছেন মমতা। পুজো নিয়ে সরকারের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যাবতীয় ঘোষণা এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মঞ্চ থেকে করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সভাস্থলে তখন ছিলেন না ভোট প্রার্থী-মুখ্যমন্ত্রী। পরে এসেছেন। আর বলেছেন, ‘ভোটের পর এই সভাটা করলে দেরি হয়ে যেত। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিয়ে এই মিটিং করা হচ্ছে।’ তাঁর কথায়, ‘নতুন কোনও ঘোষণা নয়, যা ছিল গতবার, বলবৎ থাকল এবারও।’ ভোট পর্বে রাজনীতিটা জরুরি! আর তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই নিপাট সহজ বক্তব্যকে ‘বিধিভঙ্গে’র তকমা দিয়ে নির্বাচন কমিশনে ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা নিয়ে মহাপার্বণ পালন। এই পর্বে যে যাবতীয় কোভিড প্রোটোকল মানতে হবে, তা ফের স্মরণ করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘কোভিড সচেতনতার সঙ্গেই দর্শনার্থীদের জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে উদ্যোক্তাদের। রাতের দিকে যেহেতু দশর্নার্থী বেশি হয়, তাই সেই সময় বিধিনিষেধে কতটা ছাড় দেওয়া যায়, সেটা আমরা অবশ্যই ভাবব।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ১৫ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গা প্রতিমার নিরঞ্জন পর্ব চলবে। কোভিড পরিস্থিতি ঠিক থাকলে, ১৮ অক্টোবর দুর্গা কার্নিভাল করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’
কলকাতা তথা রাজ্যের দুর্গাপুজো ক্রমেই সমাদৃত হচ্ছে বিশ্ব আঙিনায়। সেই নিরিখে মমতা বলেন, ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল, আইআইটি খড়্গপুর ও কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি পুজো নিয়ে একটা সমীক্ষা করেছিল। তারা দেখেছিল, পুজোকে কেন্দ্র করে বাজারে অর্থের জোগান বাড়ে। ৩২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। সামগ্রিক অর্থেই পুজোকে বিশ্বের এক নম্বর উৎসব বলে আমি মনে করি।’ এই প্রসঙ্গেই ইউনেস্কোর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি—মানবতা ও সংস্কৃতির এই মহান পরবকে ‘বিশ্ব উৎসব’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন