মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

অসমের এনআরসি তালিকা গায়েব, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি যান্ত্রিক ত্রুটি

অসমের এনআরসি তালিকা গায়েব, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি যান্ত্রিক ত্রুটি

সূত্রের খবর, যে সার্ভারের আওতায় এই সব তথ্য রাখা হয়েছিল সেই সার্ভারের সাবস্ক্রিপশন শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরেও তা রিনিউ না করায় তথ্য গায়েব হয়ে গিয়েছে। এই সার্ভারকে পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একবার সার্ভার চালু হয়ে গেলেই ফের সেই তথ্য দেখা যাবে বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকরা।

গত বছর অগস্ট মাসে অসমের নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি তালিকা প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস ( এনআরসি ) ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যাচ্ছিল এই তালিকা। সেই তালিকা গায়েব হয়ে গিয়েছে ওয়েবসাইট থেকে। অর্থাৎ ওয়েবসাইটে গেলে আর কোনও তালিকা দেখা যাচ্ছে না। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির ফলেই এই তালিকা এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। এই সমস্যা সমাধানের কাজ করা হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ঠিক করা হবে।
জানা গিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হয়ে এই তথ্যকে তালিকা আকারে প্রকাশ করার দায়িত্ব ছিল উইপ্রোর। কিন্তু এই ঘটনার পরে উইপ্রোর সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন কর‍তে চাইছে এনআরসির কাজে যুক্ত আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় মোদী সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, কোনও বিশেষ অভিসন্ধি থেকেও এই কাজ হয়ে থাকতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে এই এনআরসি তালিকায় কারা অন্তর্ভুক্ত ও কারা অন্তর্ভুক্ত নন, তার পুরো তালিকা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ‘www.nrcassam.nic.in’-এ আপলোড করে এনআরসি কমিটি। গত বছর ৩১ অগস্ট এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। যদিও এখনও পর্যন্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার তরফে এই তালিকায় সম্মতি দেওয়া হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যেই সেই সম্মতি নিয়ে ফাইনাল তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। তার আগেই এই ঘটনা ঘটল।
প্রাথমিকভাবে যে এনআরসি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে ১৯ লক্ষের বেশি মানুষের নাম বাদ পড়ে। কিন্তু কেন্দ্র জানিয়েছিল, যাঁদের নাম এই তালিকায় নেই, তাঁদের সব তথ্য দেখে ও আইনি কাজকর্মের পরেই তাঁকে বিদেশি বলা যাবে, তার আগে নয়।
এই তথ্য গায়েব হওয়ার পর অসম বিধানসভার বিরোধী নেতা দেবব্রত সাইকিয়া রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে চিঠি লিখে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “হঠাৎ করে সব তথ্য এভাবে গায়েব হয়ে যাওয়া একটা রহস্য। এখনও পর্যন্ত এই তালিকা নিয়ে অনেক মানুষের অনেক অভিযোগ রয়েছে। এই তালিকা আধিকারিকদের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই কি এভাবে তথ্য গায়েব হল?” দেবব্রতবাবু আরও বলেন, “আর সেই কারণেই এই তথ্য গায়েব হওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে। এই এনআরসি তালিকার বিরুদ্ধে আবেদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার ঠিক আগেই এই ঘটনা ঘটল। এগুলো কি সব কাকতালীয়। না এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে পর্যন্ত অবমাননা করা হচ্ছে।”
সূত্রের খবর, যে সার্ভারের আওতায় এই সব তথ্য রাখা হয়েছিল সেই সার্ভারের সাবস্ক্রিপশন শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরেও তা রিনিউ না করায় তথ্য গায়েব হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনার পর উইপ্রোর দিকেই আঙুল তুলেছেন এনআরসি আধিকারিকরা। তাই উইপ্রোর সঙ্গে আর চুক্তি বাড়াতে চান না তাঁরা। এই সার্ভারকে পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একবার সার্ভার চালু হয়ে গেলেই ফের সেই তথ্য দেখা যাবে বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
সার্ভার মেরামত হয়ে যদি এনআরসি তালিকা ফের দেখাও যায়, তাও এই ঘটনার পর কেন্দ্রের মোদী সরকারের দিকেই আঙুল তুলছেন বিরোধীরা। এই ঘটনায় চিন্তায় রয়েছেন অসমের মানুষও। ইতিমধ্যেই এই এনআরসি তালিকাতে দেখা গিয়েছে, একই পরিবারের কারও নাম আছে, তো কারও নেই। এরপর যদি আবার কিছু গণ্ডগোল হয়, সেই আতঙ্কেই রয়েছেন অসমবাসী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পুলিশ নিয়োগের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান! পুলিশের জালে '১৫ পুলিশ'

 পুলিশ নিয়োগের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। ট্রেনি সাব-ইনস্পেক্টর হিসাবে কাজে যোগও দিয়েছিলেন। পুলিশের হাতে...