ওঁরা গিয়েছিলেন পেটের দায়ে৷ দিনরাত পরিশ্রম করে ঠিকাদারের হয়ে করতেন কাজ৷ দিনের শেষে মেরেকেটে শ’তিনেক টাকা রোজগার করতেন তাঁরা৷ বুধবার সারাদিন পরিশ্রমের পর ফিরেছিলেন নিজের মাথা গোঁজার ঠিকানায়৷ বিশ্রাম নিতে গিয়ে পাক জঙ্গিদের হাতে গণহত্যার বলি হতে হল বাংলার ৫ শ্রমিকের৷ লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে জঙ্গিদের ছোড়া বুলেটে ঝাঁঝরা মুর্শিদাবাদের ৫ শ্রমিকের দেহ৷ মৃত্যুর খবর কাশ্মীর থেকে মুর্শিদাবাদে আসতে খুব বেশি দেরি করেনি৷ মৃত্যুর খবর পৌঁছে যেতেই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘী থানার বাহালনগর গ্রামের বাসিন্দা গ্রামে ছড়িয়েছে শোক৷ আজ কার্যত অরন্ধন গ্রামে৷ অপেক্ষা প্রিয় মানুষটির দেহ একবার শেষ দেখে নিতে৷
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই আজ সকাল থেকে শোকে মুহ্যমান গোটা গ্রাম৷ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শুরু হয়েছে স্বজনহারানো কান্না৷ গোটা গ্রামে আজ এক হয়ে মৃত শ্রমিকদের দেহ ফিরে পেতে শুরু হয়েছে অপেক্ষা৷ প্রিয়জনের হারানোর খবর পেয়ে সেই বুধবার সন্ধ্যা থেকেই কেঁদে চলেছে মৃতের পরিবার৷ কাঁদতে কাঁদতে মৃতের পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, ‘‘আল্লাহ তুমি ওদের ক্ষমা কর না৷ ওরা জঙ্গি? কেন এমন ঘটনা ঘটল? কী চাইছে ওরা?’’
শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়৷ ‘‘আমি বাকরুদ্ধ৷ মুর্শিদাবাদের পাঁচ শ্রমিককে হারালাম৷ কোন মন্তব্যই সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়৷ নিহত পরিবারকে সবরকম সাহায্য দেওয়া হবে৷ এই পরিস্থিতিতে সব সাহায্যের জন্য প্রস্তুত আমরা৷’’ টুইটে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ‘‘এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক৷ আমি মর্মাহত৷ কোন ভাষা নেই৷ কাশ্মীরে নিহত মুর্শিদাবাদের ৫ শ্রমিক৷ কাপুরুষোচিত আক্রমণ করেছে জঙ্গিরা৷ এরা মানবতার শত্রু৷ সরকার ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে আবেদন, এদের পাশে এসে দাঁড়ান৷’’ টুইটারে লিখেছেন রাজ্যপাল৷
We are shocked and deeply saddened at the brutal killings in Kashmir. Five workers from Murshidabad lost their lives. Words will not take away the grief of the families of the deceased. All help will be extended to the families in this tragic situation
727 people are talking about this
West Bengal: Family & friends of the five labourers (who were shot dead by terrorists in Kulgam, Jammu and Kashmir yesterday) in mourning in Murshidabad.
64 people are talking about this
আজ সকালে মুর্শিদাবাদের যান লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী৷ সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকদের ফোন করে গোটা পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চান অধীর৷ নিহত পরিবারের সামনেই নিজের ফোন থেকে কেন্দ্রীয় স্বারষ্ট্রমন্ত্রকের সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷ কীভাবে দেহ নিয়ে আসা হবে? আহত শ্রমিকদের অবস্থা কী? বাকি বাঙালি শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি কী? তা জানতে চান অধীর৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন