শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৯

বাংলাদেশে পথশিশুদের জন্য ‘৭ টাকায় পুজোর বাজার’ স্টল, স্বেচ্ছাসেবীরা ধর্মে মুসলিম

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তখন শরতের বিকেলের সোনালি রোদ। পাশেই রমনা কালীমন্দিরের সামনে একটি স্টলে ব্যস্ততা বাড়ছে। স্টলের ভেতর সাজানো হচ্ছে রঙবেরঙের জামাকাপড়। কয়েকজন যুবক যুবতী দ্রুত হাতে জামা-কাপড় সাজিয়ে ফেলছেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই স্টলটিকে ঘিরে ফেলল বেশ কিছু কচিকাঁচা। তাদের জন্যই এই স্টল, যাদের ঝাঁ চকচকে শপিং মলে পুজোর পোশাক কেনার ক্ষমতা নেই। তাদের জন্য এগিয়ে এসেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। ‘ ৭ টাকায় পুজোর বাজার’ স্টলের এই অসামান্য প্রচেষ্টাটি তাদের।
স্টলের নাম ‘পুজোর বাজার ‘ লেখা থাকলেও এই স্টলের পোশাক সব ধর্মের দুঃস্থ শিশুদের জন্য। এখানে তাই ১২ বছরের সঞ্জীবের পাশে দাঁড়িয়ে ফ্রক কেনে ১০ বছরের রাশিদা।
মাত্র ৭ টাকায় পথশিশুরা পেয়ে যায় নতুন জামা। শিশুদের হাসিতে আলোয় ভরে ওঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। নতুন জামা-কাপড়গুলি কেন বিনামূল্যে দেওয়া হয় না? আসলে উদ্যোক্তারা ভাবেন শিশুরা যেন না ভাবে তাদের প্রতি দয়া করা হচ্ছে। তাই নেওয়া হয় ৭ টাকা। যাতে তারা নিঃসঙ্কোচে ও মাথা উঁচু করে পছন্দের পোশাক কিনতে পারে।
১২ বছরের অলোক তার বন্ধু মীমের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে শহিদ মিনার এলাকায় ফুল বিক্রি করে। কলেজে পড়া এক দিদি তাদের এই স্টলটির খবর দেয়। তারা দুজনেই এখানে এসে ভাইবোনদের জন্য নতুন জামা কিনেছে।
কিশোর কুমার দাস প্রতিষ্ঠিত বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন প্রায় এক হাজার নতুন জামা নিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর শুরু করেছে এই অসামান্য কর্মসূচি। চলবে বিজয়া দশমী অর্থাৎ ৮ অক্টোবর পর্যন্ত। রোজ বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই স্টল। ১ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুরা এই স্টল থেকে পোশাক কিনতে পারবে। একটি শিশু একটাই পোশাক কিনতে পারবে এই স্টল থেকে।
প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ জন পথশিশু এই স্টল থেকে কিনছে নতুন জামা।
২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আসছে এই সেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। যেমন: ‘এক টাকায় আহার’, ‘এক টাকার চিকিৎসা’ ও ‘পাঁচ টাকায় স্যানিটারি প্যাড’ নামের বিভিন্ন কর্মসূচি।
‘৭ টাকায় পুজোর বাজার’ স্টলটিতে থাকা’ সব সেচ্ছাসেবী যুবক যুবতী ধর্মে মুসলিম। পরম মমতায় পোশাকগুলি পথশিশুদের মাপমতো হচ্ছে কিনা দেখে নিচ্ছিলেন। কে কোন ধর্মের তা নিয়ে তাঁদের একেবারেই মাথাব্যথা নেই। হাসিমুখে বাচ্চাদের সামলে চলেছেন।
প্রমাণ করে চলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উক্তি যা প্রায় প্রবাদে পরিণত হয়েছে। সেটি হল, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পুলিশ নিয়োগের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান! পুলিশের জালে '১৫ পুলিশ'

 পুলিশ নিয়োগের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। ট্রেনি সাব-ইনস্পেক্টর হিসাবে কাজে যোগও দিয়েছিলেন। পুলিশের হাতে...