লোকসভায় কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। অনেকদিন পর সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বাংলার কোনও নেতা এই উচ্চতায় পৌঁছেছেন। বিধানসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দল বুধবার সংবর্ধনা দিল অধীর চৌধুরীকে। আর সেই অনুষ্ঠানে দেখা গেল বাংলা কংগ্রেসের ঐক্যের ছবিটা। তাও অনেক দিন পর! যেখানে দাঁড়িয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বললেন, “সে দিন আমি অধীরকে ঠিক চিনেছিলাম।”
এ দিন সোমেনবাবু বলেন, “১৯৯৬ সালে আমি অধীর, শঙ্কর সিং, মৃণাল সিংহরায়, সুলতান আহমেদকে টিকিট দিয়েছিলাম বলে আজকের মুখ্যমন্ত্রী গলায় শাল জড়িয়ে আত্মহত্যার নাটক করেছিলেন। আজ প্রমাণিত, আমি সে দিন অধীরকে ঠিক চিনেছিলাম।” ১৯৯৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। সেই সময়ে অধীরদের টিকিট দেওয়া নিয়ে বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। দলের ভিতরে হচ্ছে না দেখে, সেই প্রতিবাদ আছড়ে ফেলেছিলেন রাজপথে।
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “১৯৯৬ সালে আমি নবগ্রাম বিধানসভার প্রচারে গিয়ে দেখেছিলাম, একজন যুবকের কী জনপ্রিয়তা! আজ তিনিই লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা।”
শুধু তো সোমেন মিত্র বা প্রদীপ ভট্টাচার্য নন। এই অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান-সহ সমস্ত কংগ্রেস বিধায়ক। ছিলেন বামেরাও। সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী থেকে ফরওয়ার্ডব্লকের আলি ইমরান রামস (ভিক্টর)- সকলেই গলা মেলালেন অধীর বন্দনায়। চাকুলিয়ার বিধায়ক ভিক্টর বলেন, “অধীরদা আমার বিপরীত মতাদর্শের রাজনীতি করতে পারেন। কিন্তু তাঁর লড়াকু মনোভাবের জন্য ছোট বেলা থেকেই আমার অনুপ্রেরণা।”
শেষ বাঙালি কংগ্রেস নেতা হিসেবে লোকসভার দলনেতা হয়েছিলেন উত্তরণ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। পর্যবেক্ষকদের মতে, সেটা ছিল স্বাভাবিক উত্থান। কিন্তু অধীরের ক্ষেত্রে এই জায়গায় পৌঁছনোটা সহজ ছিল না। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে, লড়াই করেই আজকে এই জায়গায় পৌঁছেছেন পাঁচ বারের বহরমপুরের সাংসদ।
অনেকের মতে, সারা দেশে কংগ্রেস সংকটে। বাংলায় আরও বেশি। এই ভঙ্গুর অবস্থায় অধীরের এই জায়গায় পৌঁছে যাওয়াটা বাংলার কংগ্রেস কর্মীদের মনেও একটা রুপোলি রেখা দেখাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন