বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯

UPSC২০১৮;তে ৯৭rank করা IAS আজার জিয়া জলঙ্গীর নতুন বিডিও হয়ে আসলেন

কর্পোরেট সংস্থায় শীর্ষ পদের চাকরি ছেড়ে পরীক্ষায় বসেছিলেন আজার জিয়া। UPSC পরীক্ষায়  ২০১৮ তে ৯৭তম র‌্যাঙ্ক করে চমকে দিলেন বেনিয়াপুকুরের তরুণ।
তিরিশ বছর বয়সে কর্পোরেট সংস্থার মোটা মাইনের চাকরি, স্বচ্ছল জীবনযাপন তাঁকে তুষ্ট করতে পারেনি। তিরিশ বছর বয়সে পৌঁছে আজার বুঝতে পারেন, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রশাসনিক পদে কাজ করাই তাঁর আসল ইচ্ছা। ২০১৭ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় তিনি পাশ করলেও মনের মতো র‌্যাঙ্ক অর্জন করতে ব্যর্থ হন। এবার তাই কোমর বেঁধেই পরক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন সেন্ট জেমস স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। ফল প্রকাশের পরে জানতে পারেন, ৯৭তম স্থান তিনি অর্জন করতে সফল হয়েছেন।

মেধাবী আজার জানিয়েছেন, কনভেন্টে পড়াশোনার জেরে ছোঠবেলা থেকে অন্য রকম চিন্তা ও আদর্শে দীক্ষিত হন। সিভিল সার্ভিসকে নিজের কেরিয়ার বানাতে কোনও দিনই চাননি। কলকাতা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্ট স্টাডি নিয়ে পড়াশোনা করেন। এর পর কর্পোরেট সংস্থায় মোটা বেতনের বিনিময়ে তিনি যোগ দেন। কিন্তু তিন বছর সেখানে কাজ করার পরে সিভিল সার্ভিসে কেরিয়ার গড়তে ফের উত্‍সাহী হন। তাঁর দাবি, 'আসলে আমার রক্তেই রয়েছে দেশ সেবার বীজ।'
আজারের বাবা স্বয়ং WBCS পাশ করার পরে দীর্ঘ দিন রাজ্য সরকারের শীর্ষ পদে চাকরি করেছেন। তাঁর কাকারাও সবাই সরকারি চাকুরে। আজার জানিয়েছেন, 'বাবা বরাবর চাইতেন যাতে UPSC পরীক্ষায় বসি। কিন্তু সেই সময় এ ব্যাপারে কোনও উত্‍সাহ অনুভব করিনি। ২৮ বছর বয়সে কর্পোরেটের চাকরি থেকে পদত্যাগ করি। মা খুব দুঃখ পেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, সফল কর্পোরেট কেরিয়ার যেন বিসর্জন না দিই। কিন্তু নিজের কেরিয়ার নিয়ে আমি সন্তুষ্ট চিলাম না। মোটা অঙ্কের বেতন ছাড়া চাকরি থেকে আর কিছু পাওয়ার ছিল না।'

চাকরি ছেড়ে দুই বছর ধরে তিনি পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করেন। অবশেষে সাফল্য মেলে। আজারের কথায়, 'আয় ছাড়া চলা মুশকিল। তবে সেই সময় সঞ্চিত অর্থ আমাকে সুবিধা দেয়। তিন বার চেষ্টা করে এবার র‌্যাঙ্ক করতে পেরে ভালো লাগছে। UPSC পরীক্ষা পাশ করা বেশ কঠিন। এর জন্য কড়া শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রশিক্ষণ দরকার। তবে আমি কখনও রুটিন মেনে পড়াশোনা করিনি। সুবিধা অনুযায়ী কোনও দিন ১২ ঘণ্টা পড়তাম, আবার কখনও মাত্র ২ ঘণ্টা। তবে যতটুকু পড়তাম, তা মনঃসংযোগ উজাড় করে পড়তাম।'

UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি সারতে তিনি শহর ছেড়ে দিল্লিতে এসে বসবাস শুরু করেন। তাঁর দাবি, 'কলকাতায় এখনও UPSC পরীক্ষা নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই। আসলে ইংরেজি ও হিন্দি মাধ্যমে পড়াশোনার কারণেই এই অনীহা। বেশির ভাগ মেধাবী ছাত্রছাত্রী তাই UPSC-এর চেয়ে WBCS বেছে নেন। একই কারণে শহরে UPSC কোচিংয়ের সংখ্যা বিশেষ নেই।' দিল্লিতে হামদর্দ স্টাডি সার্কেল নামে এক কোচিং সেন্টারে UPSC পরীক্ষার জন্য তালিম নেন। এখানে বিশাল গ্রন্থাগারে তিনি দিনে ১৮ ঘণ্টাও পড়াশোনা করেছেন। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ঘাঁটার বিশেষ আগ্রহ না থাকাও আজারের পক্ষে সুবিধা হয়ে দাঁড়ায়।

ভবিষ্যত্‍ সম্পর্কে নিজের পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে আজার জানিয়েছেন, দারিদ্র দূরীকরণ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কাজ করতে চান। রাজ্যে তিনি দ্বিতীয় মুসলিম ছাত্র যিনি UPSC পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। বিষয়টি আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমি নিজেকে প্রথম একজন ভারতীয় বলে মনে করি। দেশসেবা করার আগ্রহেই UPSC পরীক্ষায় বসেছিলাম। বাংলাতে এখন UPSC নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। আশা করি ভবিষ্যতে আমার রাজ্য থেকে আরও অনেকে এই সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবেন।'

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পুলিশ নিয়োগের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান! পুলিশের জালে '১৫ পুলিশ'

 পুলিশ নিয়োগের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। ট্রেনি সাব-ইনস্পেক্টর হিসাবে কাজে যোগও দিয়েছিলেন। পুলিশের হাতে...