প্রযুক্তিবিদ্যার অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিগুলিতে (আইআইটি) গত দু’বছরে ড্রপআউটের (প্রতিষ্ঠানছুট) সংখ্যা ২৪৬১। তার মধ্যে ৪৭.৬ শতাংশ তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির (ওবিসি) পড়ুয়া। গত সপ্তাহে এই তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ড্রপআউটের শীর্ষে আইআইটি দিল্লি, দ্বিতীয় স্থানে আইআইটি খড়্গপুর, তৃতীয় আইআইটি বম্বে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত দু’বছরে ৩৭১ জন তফসিলি জাতি, ১৯৯ জন তফসিলি জনজাতি এবং ৬০১ জন ওবিসি পড়ুয়া মাঝপথে আইআইটি ছেড়েছেন। এত পড়ুয়া মাঝপথে চলে যাচ্ছেন কেন? আইআইটি খড়্গপুরের রেজিষ্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলছেন, “মূলত গবেষক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়ারা এখানে আসার আগে চাকরির চেষ্টা করেন। পরে চাকরি পেয়ে চলে যান বলে এই সমস্যা।’’ ড্রপআউটের মধ্যে তফসিলি জাতি-জনজাতি, ওবিসি পড়ুয়ার সংখ্যা এত কেন? এ ক্ষেত্রেও চাকরি পেয়ে চলে যাওয়ার যুক্তি দিয়েছেন তিনি।
এ নিয়ে অবশ্য অনেকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, বহু সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তফসিলি জাতি-জনজাতি, ওবিসি পড়ুয়াদের জাতপাতের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। যেমন হয়েছিল রোহিত ভেমুলা এবং পায়েল তদভির ক্ষেত্রে। যদিও আইআইটি খড়্গপুরের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক-পড়ুয়া বিশ্বরূপ মণ্ডল বলছেন, “আমি তফসিলি জাতিভুক্ত। এই সমস্যার পিছনে জাতিগত কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। তবে গবেষক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের মধ্যে সকলের আর্থিক সঙ্গতি সমান না হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে চাকরির তাগিদ থাকে।”
- আইআইটি খড়্গপুরের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক, বর্তমানে এনআইটি দুর্গাপুরের অধিকর্তা অনুপম বসু বলেন, ‘‘আইআইটিগুলিতে এমটেক, পিএইচডির পড়ুয়ারা অনেকেই পড়াশোনা করতে করতে চাকরি পেয়ে চলে যান। সব আইআইটিতে বি টেকের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সিজিপিএ (কিউমিলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) রাখতে হয়। সেটা হয়তো অনেকে পারেন না। এ ছাড়া আরও কারণ থাকতে পারে। ’’ মন্ত্রকের তথ্য বলছে, আইআইএমগুলিতেও গত দু’বছরে ৯৯ জন পড়াশোনার মাঝপথে প্রতিষ্ঠান ছেড়েছেন। তাঁদের মধ্যে তফসিলি জাতির ১৪ জন, জনজাতির ২১ জন ও ওবিসি পড়ুয়া ২৭ জন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন