সুরক্ষা নিশ্চিত করে তবেই উদ্বোধন
বিশ্ব বাংলা গেটের নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার নিউ টাউনে বিশ্ব বাংলা গেটের চূড়ান্ত পরিদর্শনের পরে তেমনটাই জানালেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এ দিন দুপুরে নিউ টাউনের নারকেলবাগান মোড়ে হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন এবং বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহকে সঙ্গে নিয়ে ‘বিশ্ব বাংলা গেট’ চত্বর পরিদর্শন করেন পুরমন্ত্রী। ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও দর্শকদের নিরাপত্তা সম্পূর্ণ ভাবে সুনিশ্চিত করার পরেই যে সাধারণের জন্য বিশ্ব বাংলার দ্বার খুলবে মন্ত্রী তেমনটাই জানান।
পরিদর্শন শেষে মাটি থেকে পঁচিশ মিটার উঁচুতে অবস্থিত ‘ভিউয়িং গ্যালারি’র সোফায় বসে ফিরহাদ বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই কাজগুলি করতে আরও ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী সময় দিলে উদ্বোধনের দিন ঠিক হবে।’’ তিনি জানান, আগামী দিনে নারকেল বাগান মোড়ের ব্যস্ত ট্র্যাফিকের কারণে বিশ্ব বাংলা গেটের দর্শকদের জন্য যাতায়াতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকা হয়েছে। এক বছরের মধ্যে ভূগর্ভস্থ পথের কাজ শেষ করা হবে।
পুলিশের তরফে কী ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে?
ভিউয়িং গ্যালারি থেকে নিউ টাউন-রাজারহাটের আকাশ দেখার জন্য কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে খানিক হেঁটে গেটের নীচে লিফট ধরে দর্শকদের উপরে উঠতে হবে। টিকিটের দাম এখনও চূড়ান্ত করেননি হিডকো কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রী জানান, এই যাত্রাপথে লিফটের কাছে মেটাল ডিটেক্টর বসানো হবে। বৃষ্টির সময় দর্শকদের যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য থাকবে ‘গ্লাস প্যানেল’। ওয়েটিং লাউঞ্জ সংলগ্ন কাউন্টার থেকে টিকিট কাটার সময়ে দর্শকদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য সেখানেও আচ্ছাদন দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। পাশাপাশি, পার্কিং নিয়েও পুলিশের বক্তব্য রয়েছে। আপাতত টিকিট কাউন্টারের সামনের রাস্তার উপরে পার্কিংয়ের জায়গা করা হয়েছে। কিন্তু ভিড়ের সময় তা পর্যাপ্ত হবে না বলে মনে করছে বিধাননগর কমিশনারেট। তাই কাউন্টারের পিছনের দিকে আরও ৬৫টি গাড়ি রাখার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে বলে খবর।
ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে কলকাতা এবং সংলগ্ন শহরতলির কাছে এখন অন্যতম আকর্ষণ ইকো পার্ক। বিশ্ব বাংলা গেট এ বছর নতুন সংযোজন হতে পারে। সম্ভবত সেই ভিড়ের কথা মাথায় রেখে দর্শকদের নিরাপত্তার দিকটি সুনিশ্চিত করতে চাইছে পুলিশ। হিডকো সূত্রের খবর, ভিড় নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিড়লা তারামণ্ডল বা সিনেমার মতো শোয়ের নিরিখে টিকিট দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্ভবত সে জন্যই মন্ত্রী বলেন, ‘‘গ্যালারি এক বারে দেড়শো জনের ভার বহনে সক্ষম হলেও, এখন ৫০ জন করে দর্শক তোলা হবে। গ্যালারির ভার বহন ক্ষমতা সংক্রান্ত ফিট সার্টিফিকেট রাইটসের কাছে পেয়েছি। আয়লার মতো ঝড়েও যে বিশ্ব বাংলা গেট নিরাপদ, পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে আইআইটি কানপুর সেই শংসাপত্র দিয়েছে।’’
দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াকের অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্ব বাংলা গেটের পরিছন্নতা রক্ষা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘পানের পিক, থুতু বা অন্য কোনও কিছু থেকে বিশ্ব বাংলা গেটের সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয়, সে দিকে নজর রাখতে নিরাপত্তারক্ষী থাকবে। থুতু ফেললে নিজেকে পরিষ্কার করতে হবে। স্কাইওয়াকে এমনই দাওয়াই কাজ দিয়েছে।’’
তিনি জানান, প্রকাশ্য রাস্তায় থুতু, পান, গুটখার পিক ফেলে যাঁরা শহর নোংরা করেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। ফিরহাদ বলেন, ‘‘স্কাইওয়াকের অভিজ্ঞতা থেকে মুখ্যমন্ত্রী একটি বৈঠক ডেকেছেন। এই প্রবণতা কী ভাবে আটকানো যায়, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’
পরিদর্শন শেষে মাটি থেকে পঁচিশ মিটার উঁচুতে অবস্থিত ‘ভিউয়িং গ্যালারি’র সোফায় বসে ফিরহাদ বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই কাজগুলি করতে আরও ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী সময় দিলে উদ্বোধনের দিন ঠিক হবে।’’ তিনি জানান, আগামী দিনে নারকেল বাগান মোড়ের ব্যস্ত ট্র্যাফিকের কারণে বিশ্ব বাংলা গেটের দর্শকদের জন্য যাতায়াতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য ভূগর্ভস্থ পথ তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকা হয়েছে। এক বছরের মধ্যে ভূগর্ভস্থ পথের কাজ শেষ করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন